‘মিলিয়নার’ শব্দটা শুনলেই যেন চোখের সামনে কত শত বিস্ময় ভেসে ওঠে! গুগলে সার্চ করে বা পত্রিকার পাতায় যখন সেরা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তালিকায় চোখ বুলান, বিস্ময়ের সাথে মনের কোণে জন্ম নেয় কতশত প্রশ্ন তাই না? পৃথিবীর সেরা প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে যেসব বিলিয়নার বা মিলিয়নারদের আমরা চিনি এবং জানি তারা কিন্তু কেউই যেনতেন ভাবে বিলিয়নার/মিলিয়নার হয়ে উঠেন নি। আমাদের মতোই সাধারণ মানুষ ছিলেন তারা কিন্তু কি এমন ছিল যে তারা রাতারাতি অসাধারণ হয়ে গেল? কি এমন কাজ করেছিল যে পুরো পৃথিবী তাদের চিনে গেল?
তাদের ছিল একটা স্বপ্ন, সাহস আর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন অদম্য ইচ্ছাশক্তি। স্বপ্নের সাথে সাথে মেধা ও শ্রমকে কাজে লাগিয়ে তারা আজ এখানে পৌঁছাতে পেরেছেন। মিলিয়নার হওয়ার পর তাদের জীবনগল্প সবার মুখে মুখে কিন্তু এর আগের জীবনের কথা কি জানা আছে? আজ বরং জেনেই আসুন ১০ মিলিয়নারের মিলিয়নার হওয়ার পূর্বের গল্প।
• ইলন মাস্ক
স্কুলজীবনে “মানব কল্যানে বিজ্ঞান” শিরোনামের রচনা বহুবার পড়েছি আমরা, সাদা কাগজে লিখেছি পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা। কিন্তু সত্যিই কি মানব কল্যানে বিজ্ঞানকে কাজে লাগাবার কথা ভেবেছি?
আমি আপনি না ভাবলেও ভেবেছে একজন। পুরো নাম ইলন রীভ মাস্ক তবে ইলন মাস্ক হিসেবেই সমাদৃত সকলের কাছে এছাড়াও পরিচিতি রয়েছে তরুন উদ্যোক্তা, প্রকৌশলী, বিনিয়োগকারী, উদ্ভাবক এবং ব্যবসায়ী হিসেবেও।
অজানাকে জানার প্রবল আগ্রহ তাকে সমবয়সী সবার থেকে ভিন্ন করে তুলেছিল। দিনের বেশিরভাগ সময় ব্যয় করতেন বই পড়ার মাধ্যমে । পদার্থ এবং অর্থনীতির উপর তার আগ্রহ ছিল সবথেকে বেশি। বাবা মায়ের সম্পর্কে ফাটল ধরায় মাত্র ৯ বছর বয়সী মাস্ক কম্পিউটারকেই আপন করে নিয়েছেলেন। কম্পিউটার প্রোগ্রামিং সম্পর্কে তার ব্যাপক বিস্ময়তার কারনে মাত্র বারো বছর বয়সে নিজে নিজেই প্রোগ্রামিং শিখে ‘ব্লাস্টার’ নামে একটি ভিডিও গেম নির্মাণ করেন।
সাফল্যমণ্ডিত শিক্ষাজীবনের শেষ পর্যায়ে পিএইচডি ডিগ্রী অসম্পূর্ণ রেখেই নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে ভাইয়ের সাথে মিলে তৈরি করেন তাঁর প্রথম কোম্পানী “জিপ টু” প্রতিষ্ঠা করেন যা ছিল একটি অনলাইন সিটি গাইড সফটওয়্যার।
১৯৯৯ সালে মাস্ক কয়েকজন সহকর্মীর সাথে মিলে তৈরি করেন ইন্টারনেটভিত্তিক মানি ট্রান্সফার সিস্টেম ‘এক্স ডট কম(x.com)’। ২০০০ সালে এক্স ডট কমে যোগ করেন নতুন কিছু বিষয়। এই এক্স ডট কম-ই বর্তমানে সবার ‘পেপ্যাল’ নামে পরিচিত এবং বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে লেনদেনের সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় মাধ্যম এটি।

অজানাকে জানা এবং অসাধারণ সব স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার প্রচেষ্টাই মাস্ক’কে প্রতিটা ক্ষেত্রে এনে দিয়েছে সাফল্য। সেই ধারাবাহিকতায় ২০০২ সালে মাস্ক মহাকাশ ভ্রমণ সেবা প্রদানের কথা চিন্তা করেন এবং এটিকে বানিজ্যিকরূপ দেবার উদ্দেশ্যে মহাকাশযান তৈরীর কোম্পানী “স্পেস এক্স” ( স্পেস এক্সপ্লোরেশন টেকনোলজিস কর্পোরেশন) প্রতিষ্ঠা করেন। মহাকাশ যাত্রাকে মাস্ক প্রচলিত রকেটের চাইতে অনেকগুণ বেশী সাশ্রয়ী করে তুলেছেন এবং কার্যকারিতার দিক থেকেও বর্তমানে এক নম্বরে অবস্থান করছে স্পেস এক্স। বর্তমানে আমেরিকার সরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সঙ্গে চুক্তিও রয়েছে স্পেস এক্সের।
গাড়ির প্রতি যাদের ভালোবাসা রয়েছে ‘টেসলা মোটরসে’র নাম তাদের মুখে মুখে। ২০০৩ সালে যাত্রা শুরু হয় গাড়ি নির্মাণকারী কোম্পানি টেসলা মোটরসের যদিও তাদের যাত্রায় সাফল্যের মুখ তারা দেখে নি। পরবর্তীতে মাস্ক এতে টেসলাতে যোগদান করার পর কোম্পানীটি নতুন করে প্রান ফিরে পায়।
বর্তমানে তিনি ৪৭ বছর বয়সী মাস্ক সোলারসিটি, মঙ্গল গ্রহে বসবাস, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, যোগাযোগ প্রযুক্তির বিস্ময়কর আবিষ্কার হাইপার-লুপ, স্নায়ুবিজ্ঞান নিয়ে গবেষনা কেন্দ্র- নিউরালিঙ্কসহ বহু বিধ কার্যক্রমে যুক্ত যা শুধুমাত্র মানব জাতির কল্যানে।
• বিল গেটস
মনে জন্মে ছিল মাত্র একটি প্রশ্ন আর সেই প্রশ্নই তার পুরো জীবন বদলে দিলো, এক নামে চিনিয়ে দিল পৃথিবীকে। বলছি বিল গেটসের কথা।
তিন সন্তানের মধ্যে একমাত্র পুত্র সন্তান ছিলেন বিল। বাবা-মায়ের ইচ্ছা ছিলো ছেলেও বাবার মতোই বিখ্যাত আইনজীবী হবে। বাড়ির কাছের লেকসাইড স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর কম্পিউটারের নিয়ে আগ্রহ শুরু হয় বিলের। স্কুলে ছাত্র হিসেবে বিলের সাফল্য খুব বেশি না থাকলেও বিল জানার আগ্রহ ছিল অত্যন্ত বেশি যার কারনে খুব অল্প বয়সে ‘ওয়ার্ল্ড বুক অব এনসাইক্লোপিডিয়া’-র সবগুলো পার্ট পড়ে শেষ করেছিলেন।
স্কুলের কম্পিউটার সেকশনের ছাত্রদের জন্য কয়েকটি Teletype Model 33 Computer ক্রয়ের সিদ্ধান্তে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এ বিল তার দক্ষতা প্রমানের সুযোগ পান।
কম্পিউটারে কাজ করতে গিয়ে বিলের মাথায় শুধু একটা প্রশ্নই ঘুরতো–কম্পিউটার সফটওয়্যারগুলোর প্রোগ্রামিং কোড কিভাবে এত সহজে পড়তে পারে? ঠিক এই সময়ই অতিরিক্ত কৌতুহল থেকে ডেমো অপারেটিং সিস্টেম আবিষ্কার করেন যার কারনে বিল ও তার বন্ধুকে স্কুল থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

১৯৭৩ সালে হার্ভার্ডে পড়তে এসে বিল পরিচিত হয় স্টীভ বালমারের সাথে যিনি পরবর্তীতে মাইক্রোসফটের সিইও পদে ছিলেন। বিল তার বেশির ভাগ সময় কাটাতেন কম্পিউটার ল্যাবে। ১৯৭৪ সালে বিল তার বন্ধু পলকে সাথে নিয়ে তৈরী করেন এম.আই.টি.এস ‘৪৪০০’ যা ইন্টেল ৮০৮০ সিপিইউতে ব্যবহারের উপযুক্ত এবং এর পরপরই বিল একটি সফটওয়ার কোম্পানী প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য তিনি হার্ভার্ড ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। এরপরের ঘটনাতো সবারই জানা।
• ক্রিস জেনার
নিজের সামাজিক জীবনধারা নিয়ে বার বার সমালোচিত হলেও এ কথা অস্বীকার করার উপায় নাই যে সবকিছুর উপরে তিনি ক্যারিয়ার’কে গুরুত্ব দিয়েছেন।

তার বাবা ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার অন্যদিকে মা গৃহিনী। ক্রিস আর্দশ একজন স্ত্রী, একজন মা হয়ে উঠার স্বপ্ন দেখতেন যা তার কাছে তার উচ্চ শিক্ষার থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। ১৯৭৮ সালে বিখ্যাত আইনজিবী রবার্ট কার্দাসিয়ানকে বিয়ে করেন এবং সেখানে তার ৪ সন্তান ছিল। ১৯৯১ সালে ক্রিস জেনার তাঁর প্রথম বিয়েটি ভেঙে যায় এবং পরবর্তীতে তিনি বিয়ে করেন অলিম্পিক জয়ী ব্রুস জেনারকে তবে সে বিয়েও স্থায়ী হয় নি।
২০০৭ সালে তিনি ক্রিস জেনার প্রযোজক রায়ান সিক্রেস্টের সাথে দেখা করেন। পরবর্তীতে তার রিয়েলিটি শো এর যাত্রা শুরু হয়। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নি ক্রিস জেনারকে।
• ল্যারি পেজ এবং সার্জেই ব্রিন
বিশ্ববিখ্যাত সার্চ ইঞ্জিন “গুগল” এর নাম জানে না এমন লোক খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। “গুগল” ও সার্চ ইঞ্জিন” যেমন একে অপরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত তেমন এর সাথেই জড়িয়ে আছে ল্যারি পেজ এবং সার্জেই ব্রিন।
মিশিগান স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানের শিক্ষক দম্পতির ঘরে বিজ্ঞান, কম্পিউটার ও প্রযুক্তির মধ্যে বেড়ে ওঠেন ল্যারি পেজ।
মাত্র ৬ বছর বয়সে কম্পিউটারের উপর প্রথম আগ্রহ জন্মে ল্যারির। বড় ভাইয়ের প্রবল উৎসাহে তিনি প্রযুক্তির সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন। পরবর্তীতে পিএইচডি প্রোগ্রামে পরিচয় হয় গুগলের সহপ্রতিষ্ঠাতা সার্জে ব্রিনের সাথে যার জন্ম হয়েছিল রাশিয়ান ইহুদী পরিবারে। পিতা ছিলেন গনিতবিদ এবং মা নাসায় কর্মরত গবেষক। গণিতবিদ বাবার উৎসাহে তিনি বাসায় গণিত চর্চা চালিয়ে যেতেন।

স্ট্যানফোর্ডের পড়ার সময় দুই বন্ধু ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের বিশাল লিংক ভান্ডার এবং কনটেন্ট নিয়ে গবেষণা প্রোজেক্ট করেন, যার নাম ছিল “ব্যাকরাব”। পরবর্তীতে “পেজ র্যাঙ্ক” নামক অ্যালগোরিদম উদ্ভাবনের পর তারা অনুধাবন পারেন যে এটি ব্যবহার করে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করা যেতে পারে। মূলত গাণিতিক ধারণা “গোগোল” থেকেই জনপ্রিয় এ সার্চ ইঞ্জিনের নাম হয় “গুগল”। আশ্চর্য হলেও সত্যি যে বিশ্ববিখ্যাত সার্চ ইঞ্জিন গুগলের জন্ম একটি গ্যারেজে।
সার্চ ইঞ্জিন তৈরি হলেও নতুন কোম্পানী শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ দুই বন্ধুর কাছে ছিলো না। এ সময় পাশে এসে দাড়ান মাইক্রো সিস্টেমের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এন্ডি বেথটোশেইম। অন্যদিকে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব থেকে ১ মিলিয়ন ডলার যোগার করে ১৯৯৮ সালে দুই বন্ধু মিলে তাঁদের কোম্পানি “গুগল ইনকর্পোরেট” শুরু করেন। সময়ের সাথে নিজেরদের পরিবর্তনের সাথে সাথে উন্নত সেবা যোগ করে গুগল প্রতিনিয়ত নিজেদের জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে চলেছে।
• মার্ক জুকারবার্গ
রোজকার জীবনযাপনে অন্যতম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে। ফেসবুক যে শুধুমাত্র শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তা কিন্তু নয় বরং বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ মার্কেটিং প্লাটফর্ম হিসেবেও বিবেচনা করা হয় এটিকে। আমাদের Facebook Page
শুধুমাত্র মেধা ও পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে শূন্য থেকে আজ এখানে তিনি এসেছেন। খুব ছোট থেকে কম্পিউটারের উপর আগ্রহ জন্মায় মার্কের। মাত্র ১২ বছর বয়সে তার বাবার শেখানো আত্তারী বেসিক’কে
কাজে লাগিয়ে “জুকনেট” নামক একটি প্রোগ্রাম তৈরি করেছিলেন যা তার বাবা নিজের কাজে ব্যবহার করার পাশাপাশি তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতে ব্যবহার করতো। এসময় খেলার ছলে কয়েকজন বন্ধুর সাথে মিলে একটি কম্পিউটার গেমও তৈরী করেছিলেন।
স্কুলে পড়ার সময়েই মার্ক প্যান্ডোরা মিউজিক সফটওয়্যারের প্রাইমারী ভার্সন তৈরী করেন যা দেখে এ.ও.এল এবং মতো কোম্পানী মার্ককে লোভনীয় ও আকষর্ণীয় প্রস্তাব দিয়েছিলো কিন্তু মার্ক সেসব নাকচ করে দেন।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষে থাকাকালীন সময়ে তিনি “Coursematch” নামে একটি প্রোগ্রাম তৈরী করেন। “Coursematch” মূলত একজন শিক্ষার্থীকে অন্য শিক্ষার্থীদের কোর্স নির্বাচনের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সুবিধাজনক ক্লাসটি বেছে নিতে করতো। পরবর্তীতে তিনি ” Facemash” নামে আরও একটি প্রোগ্রাম তৈরী করেছিলেন যেখানে যে কোনো দুইজন শিক্ষার্থীর ছবি শেয়ার করা যেত এবং ভোট দেয়া যেত। বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ এটি করতে অনুমতি না দিলেও প্রতিভাবান এ প্রোগ্রামার থেকে থাকেন নি।
ফেসম্যাশ থেকেই তার হার্ভার্ড স্টুডেন্ট নেটওয়ার্ককে বৃদ্ধি করার ধারনা জন্মায়। এরপর তিনি ও তার বন্ধুরা মিলে ফেসবুক চালু করে। মার্ক ফেসবুক’কে সফলভাবে প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে হার্ভার্ড ছেড়ে বেরিয়ে আসেন।
ফেসবুক প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে এটি হার্ভাডের ছাত্রদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও ধীরে ধীরে এর পরিধি বাড়তে থাকে এবং ২০০৬ সালে ফেসবুক জনসাধারনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
• টিম কুক
অ্যাপলের সবচেয়ে বড় দুঃসময়ে স্টিভ জবসকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার পরও যখন অ্যাপলের অবস্থা শোচনীয় তখন স্টিভ জবসের পাশাপাশি যে ব্যক্তিটি হাল ধরেছিলেন সে আর কেউ নয় বর্তমান অ্যাপল এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
পুরো নাম টিমোথি ডি. কুক। সাফল্যমণ্ডিত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে চাকরি করেছিলেন । আইবিএম,ইন্টেলিজেন্ট ইলেক্ট্রনিক্স,কমপ্যাক কম্পিউটার করপোরেশনে করপোরেট ম্যাটেরিয়ালসে।

১৯৯৮ সালে অ্যাপল যখন প্রায় ধ্বংসের মুখে ঠিক এ সময়টাতে কুক ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠানটিতে যোগ দেন। স্টিভ জবস ও টিম কুকের অদম্য চেষ্টার ফলে খুব কম সময়ের মধ্যেই অ্যাপল লাভের মুখ দেখতে শুরু করলো।
টিম কুক ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে যোগদান করলেও নিজের যোগ্যতার বলে ধীরে ধীরে এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট, এবং এরপর চিফ অপারেশনাল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
২০১১ সালের আগস্টে স্টিভ জবসের মৃত্যুর পর স্টিভ জবসের ইচ্ছায় টিম কুক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্বে মনোনীত হন এবং তিনি যে এ পদের যোগ্য তা তিনি প্রমাণও করে যাচ্ছেন অবিরত।
• রিচার্ড ব্রানসন
স্কুলের সবথেকে নির্বোধ শিশু হিসেবে বিবেচিত রিচার্ড ব্রানসনকে নিয়ে কেউ বড় স্বপ্ন দেখেনি। বলছি ভার্জিন কোম্পানীর গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা এবং উদ্যোক্তাদের গুরু রিচার্ড ব্রানসনের কথা। প্রবল ইচ্ছাশক্তি,সাহস এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপ তাকে এনে দিয়েছে অভাবনীয় সাফল্য।
ডিস্লেক্সিয়াতে ভুগছিলেন ছোট থেকেই।ডিস্লেক্সিয়াতে আক্রান্ত ব্যক্তির লিখতে-পড়তে সমস্যা হয় যার কারনে রিচার্ডের শিক্ষাজীবন খুব একটা দীর্ঘস্থায়ী হয় নি সাথে ছিল প্রত্যেক গ্রেডের হতাশাজনক ফলাফল। ব্র্যানসনকে নিয়ে তার কাছের মানুষগুলো বড় কোনো স্বপ্ন দেখে নি।

মাত্র ১৬ বছর বয়সে স্কুলড্রপ আউট ছেলেটি লেখাপড়ার পাট চুকিয়ে বের করেন ‘স্টুডেন্ট’ নামক ম্যাগাজিন, যার প্রথম ৫০ হাজার কপি শুধুমাত্র প্রচারের জন্য বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছিল। শুরুটা ছিল এ ভাবেই তবে রিচার্ডের সাফল্যের মূলমন্ত্র ছিল হাল না ছাড়া।
স্কুলজীবনের শেষ দিনে তার প্রধান শিক্ষক তাকে বলেছিলেন, ‘হয় তুমি জেলে যাবে না হয় কোটিপতি হবে’। তার প্রধান শিক্ষকের করা উক্তি দুটি সঠিক হয়েছিলো। অনিয়মের বেড়াজালে রিচার্ড জেলে গিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু তিনি এ থেকে শিক্ষাও নিয়েছিলেন।
জীবনে চলার পথে যে সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হয়েছেন ব্র্যানসন সেগুলোকেই কাজে লাগিয়ে পথ চলেছেন। নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি নিজেকে যাচাই করেছেন নিজেকে তাইতো আজ ভার্জিন রেকর্ড থেকে শুরু করে এয়ারলাইন,ট্রেইন, পানীয়, ট্যুরিজমসহ আজ তার চারশ এর বেশি কোম্পা
• সুসান ওজস্কি
সুসান ডি ওজস্কি সংক্ষেপে সুসান ওজস্কি – এ নামেই পরিচিত সকল মহলে। আইটি সেক্টরে সফল ক্যারিয়ার তৈরি করার মাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছেন প্রভাবশালী নারীদের তালিকায়।
গুগলের প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ এবং সার্জেই ব্রিনের বন্ধু ছিলেন সুসান ওজস্কির বাবা স্ট্যানলি ওজস্কি। বিশ্বখ্যাত সার্চ ইঞ্জিন গুগল যে গ্যারেজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সেই গ্যারেজের মালিক ছিলেন স্ট্যানলি ওজস্কি।

সুসানের সাথে গুগলের সম্পর্ক বেশ পুরনো। সুসান গুগলের বিজ্ঞাপন ও বাণিজ্য বিভাগে ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৪ সালে তিনিই গুগলকে ইউটিউব কেনার পরামর্শ দেন। পরবর্তীতে তিনিই ইউটিউবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন।
• স্টিভ ওজনিয়াক
“অ্যাপল কোম্পানী” শুরু হয়েছিল স্টিভ জবস ও স্টিভ ওজনিয়াকের হাত ধরে। যদিও অ্যাপলের নামের সাথে সবসময় স্টিভ জবসের নামটাই আগে আসে তবে শুরুটা হয়েছিল ওজনিয়াকের হাত ধরে।

brightside
ইলেকট্রনিক্সের জাদুকর ওজনিয়াকের ইলেকট্রনিক্সের প্রতি ভালো লাগাটা শুরু হয় খুব ছোট থেকে। ওজনিয়াকের স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ার হবার। জবস ও ওজনিয়াক একত্রে একটি ডিভাইস বানিয়েছিলেন যার নাম ছিল। ব্লু বক্স যা দিয়ে বিনা খরচে টেলিফোন কল করা যেত। পরবর্তীতে হোমব্রু কম্পিউটার ক্লাব থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ওজনিয়াক একটি মিনি কম্পিউটার ডিজাইন করেন।
১৯৭৬ সালে জবস এবং ওজনিয়াক সার্কিট বোর্ড বিক্রয়ের মাধ্যমে তাদের কোম্পানী শুরু করেন এবং কোম্পানী র নাম ছিল “অ্যাপল কম্পিউটার কোম্পানী”। মূলত সহজ সাধারণ এজনিয়াক কাজ করতেন নিজের মনের মনের তৃপ্তি মেটাতে এবং অন্যদিকে স্টিভ তাকে ব্যবসায়িক রূপ দিতেন।