নীলা আফরিন আজ খুবই ব্যস্ত কেননা তার অফিসে আজ অনেক জরুরি মিটিং আছে। সবকিছুই তাকে দেখতে হচ্ছে কিন্তু হঠাৎই তিনি অনুভব করলেন তার গলা,বুকের নিচে থেকে পেট অবধি জ্বলে যাচ্ছে, বমিভাব হচ্ছে, মাথা ঘুরছে। তিনি ওষুধ খেয়েছেন কিন্তু তার শরীর ক্রমশই খারাপের দিকে যাচ্ছে।
জনাব রহমানের মতো অবস্থায় আমরা অনেকেই পড়েছি। মেডিকেলের ভাষায় একে গ্যাস্ট্রাইটিস বলা হয়। সাধারণ রোজকার জীবনযাত্রার ধরন, অস্বাস্থ্যকর খাওয়া দাওয়া এই সমস্যার প্রধান কারন। খুবই সাধারণ সমস্যা এবং এই সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে নানারকম মেডিসিন ও ডাক্তারের শরণাপন্ন হন নি এমন লোকও খুঁজে পাওয়া যাবে না। । অথচ আপনি চাইলে গ্যাস্ট্রাইটিস সমস্যার সমাধান আপনার ঘরে বসেই করতে পারেন।গ্যাস্ট্রাইটিসের খুঁটিনাটি এবং ঘরোয়াভাবে প্রতিকার করার উপায়গুলো আপনাকে জানানোই আজকের এই আর্টিকেলের উদ্দেশ্য।
গ্যাস্ট্রাইটিস কি?
পাকস্থলীর আবরণের অস্বস্তি, ব্যথা কিংবা ক্ষয়জাতীয় সমস্যাকেই গ্যাসট্রাইটিস নামে আখ্যায়িত করা হয়। সাধারণত পাকস্থলীতে জ্বালাপোড়া/প্রদাহের কারণে গ্যাস্ট্রাইটিস দেখা দেয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় ব্যাক্টেরিয়ার ইনফেকশনের কারণে পাকস্থলীতে নানারকম সমস্যা দেখা দেয় যা পরবর্তীতে আলসারে রূপ নেয়।এছাড়াও অস্বাস্থ্যকর খাওয়া দাওয়া,দীর্ঘদিন যাবত ব্যথা উপশমের ঔষধ এবং অতিরিক্ত পরিমাণে মদ্যপান, হতাশাও গ্যাস্ট্রাইটিস রোগের অন্যতম কারণ।
গ্যাস্ট্রাইটিসের প্রকারভেদ
গ্যাস্ট্রাইটিস মূলত দুটি ধরণের হয়।
(i) অ্যাকিউট গ্যাস্ট্রাইটিসঃ অ্যাকিউট গ্যাস্টাইটিস এর ক্ষেত্রে তীব্র ব্যাথা হয়। এটি হঠাৎ শুরু হয় এবং কেবল অল্প সময়ের জন্য স্থায়ী হয়।
(ii) ক্রোনিক গ্যাস্ট্রাইটিসঃ ক্রোনিক গ্যাস্ট্রাইটিসের সমস্যা বেশ দীর্ঘস্থায়ী হয়। তবে এটি যদি অবহেলা করে চিকিৎসা করা না হয় তবে আলসার, ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি থাকে।
গ্যাস্ট্রাইটিসের কারণসমূহ
• অস্বাস্থ্যকর খাওয়া দাওয়া করা।
• অতিরিক্ত ধূমপান।
• মাত্রারিক্ত মদ্যপান।
• দীর্ঘদিন ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করা।
• হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি সংক্রমণ (ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ)
• অটোইমিউন ডিসওর্ডার।
• অতিরিক্ত চিন্তা।
• অত্যাধিক মানসিক চাপ।
• হার্পিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসের মতো ভাইরাসজনিত সংক্রমণ (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাদের কম সেসব লোকের মধ্যে দেখা যায়)।
• বাইল রিফ্ল্যাক্স।
• বার্ধক্যজনিত সমস্যা।
গ্যাস্ট্রাইটিসের লক্ষণ ও উপসর্গ
গ্যাস্ট্রাইটিসের লক্ষণগুলোর মধ্যে সাধারণ একটি লক্ষন হচ্ছে পেটে ফাপা, থেকে শুরু করে তীব্র ব্যাথা।গ্যাস্ট্রাইটিসের অন্যান্য সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে –
• বমি বমি ভাব।
• বমি।
• ক্ষুধামান্দ্য।
• পেটের যে কোন অংশে ব্যথা( সাধারণত বাম পাশে হয়ে থাকে)।
• পেট ফাঁপা।
• বুক জ্বালা।
• বুকে তীক্ষ্ণ ব্যাথা বা ভার হয়ে থাকা।
• ঘন ঘন ঢেকুর তোলা।
• মাথা ঘোরা।
• মলের বর্নের পরিবর্তন।
• রক্ত বমি।
এবার তাহলে গ্যাস্ট্রাইটিসের সঠিক ঘরোয়া প্রতিকারের উপায়গুলো জেনে নেওয়া যাক
১. আপেল সাইডার ভিনেগার

যা যা প্রয়োজন হবে
• ১ টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার।
• ১চা চামচ মধু।
• এক গ্লাস পানি।
যেভাবে তৈরি করবেন
এক গ্লাস পানিতে মধু এবং ভিনেগার যোগ করুন এবং এরপর ভালোভাবে নাড়িয়ে নিন।
প্রতিদিন ১/২ গ্লাস খেতে পারেন।
উপকারিতা
বর্তমানে ‘আপেল সাইডার ভিনেগার’ নামটি বেশ জনপ্রিয়। শুধুমাত্র রান্নাঘরে রান্নার কাজে নয় বরং গৃহস্থালিসহ, চিকিৎসা এবং রূপচর্চাতেও সমানভাবে জনপ্রিয়। অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এজেন্ট হিসেবে পরিচিত আপেল সাইডার ভিনেগার গ্যাস্ট্রাইটিসসের ক্ষেত্রে বেশ বড় ভূমিকা পালন করে। এটি হজম শক্তি উন্নত করে এবং পাকস্থলীর প্রদাহ রোধ করে। আপেল সাইডার ভিনেগারে রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণ যা পাকস্থলীতে ছত্রাক ভিত্তিক সংক্রমণকে দূরে রাখে। এছাড়াও এতে থাকা ম্যালিক অ্যাসিড রয়েছে যা পেটের বাফার হিসেবে কাজ করে।
অন্যদিকে মধু পাকস্থলীর অম্লভাব হ্রাস করে দ্রুত হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে এবং পাকস্থলীর প্রদাহ কমিয়ে শান্ত করতে সহায়তা করে।
২. অ্যালোভেরা

যা যা প্রয়োজন হবে
• ২ চা চামচ তাজা অ্যালোভেরা জেল।
• এক গ্লাস পানি।
যেভাবে তৈরি করবেন
ব্লেন্ডারে অ্যালোভেরা জেল ও পানি ব্লেন্ড করে নিন।
প্রতিদিন ১/২ গ্লাস নিশ্চিন্তে খেতে পারেন। গ্যাস্ট্রাইটিস ছাড়াও অ্যালোভেরা আমাদের শরীরে বহুবিদ উপকার করে থাকে।
উপকারিতা
অ্যালোভেরা’র অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান পাকস্থলী ঠাণ্ডা রাখে এবং গ্যাসের সমস্যা দূর করে। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান পাকস্থলীকে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন থেকে দূরে রাখে।
অ্যালোভেরায় রয়েছে অ্যালোইন নামের প্রোটিন যা সরাসরি ফ্যাট না কমালেও শরীরে জমে থাকা টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।
তবে একটা বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি। অ্যালোভেরার রস বেশি পরিমাণে শরীরে গেলে পেটের সমস্যা, ডায়রিয়া হতে পারে। তাই অ্যালোভেরার রস খান সঠিক পরিমাণে। আবার অনেকের অ্যালোভেরা’তে অ্যালার্জি থাকে তাই খাওয়ার আগে জেনে নিন অ্যালোভেরা আপনার জন্য উপকারী নাকি অপকারী।
৩. বেকিং সোডা

যা প্রয়োজন হবে
• ১ চা চামচ বেকিং সোডা।
• এক গ্লাস পানি।
যে ভাবে তৈরি করবেন
মিশ্রণটি ভালোভাবে না মেশা পর্যন্ত পানিতে বেকিং সোডা নাড়তে থাকুন।
যদি গ্যাস্ট্রাইটিসের কোনো লক্ষন দেখা দেয় তখন খেতে পারেন।
উপকারিতা
বেকিং সোডা যার রাসায়নিক নাম সোডিয়াম বাই কার্বনেট। বেকিং সোডা অ্যান্টাসিড হিসাবে কাজ করে এবং পেটে অ্যাসিডের মাত্রা কমায়।
৪. ডাবের পানি
যা প্রয়োজন হবে
• ডাবের পানি।
প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় আপনি ডাবের পানি রাখতে পারেন।
উপকারিতা
ডাবের পানির রয়েছে বহুবিধ উপকারিতা। তবে এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য গ্যাস্ট্রাইটিসের ক্ষেত্রে পাকস্থলীর প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও ডাবের পানিতে রয়েছে আশঁ যা হজম শক্তি উন্নত করে।
৫. বাঁধাকপির জুস

যা প্রয়োজন হবে
• সবুজ বাধাকপি।
যেভাবে তৈরি করবেন
বাঁধাকপি কে টুকরো টুকরো করে কেটে নিন। জুসার বা ব্লেন্ডারে জুস করে নিন।
বাঁধাকপির জুস’কে আরো স্বাস্থ্যকর এবং স্বাদযুক্ত করতে আপনার ইচ্ছামত আরো কিছু (যেমনঃ গাজর) যোগ করতে পারেন
রোজকার কাজের ফাঁকে ১/২ গ্লাস খেতেই পারেন।
উপকারিতা
বাঁধাকপির মধ্যে রয়েছে আলসার নিরাময়কারী উপাদান যা ভিটামিন ইউ হিসাবে পরিচিত যা পাকস্থলীর ক্ষত সারিয়ে তুলতে পারে এবং খুব দ্রুত আপনাকে গ্যাস্ট্রাইটিস থেকে মুক্তি দিতে পারে।বাঁধাকপিতে প্রচুর পরিমাণ আঁশ আছে যা হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এছাড়াও খাদ্যতালিকায় নিয়মিত বাঁধাকপি রাখলে বুক জ্বালা-পোড়া, পেট ফাঁপা ইত্যাদিসহ বিভিন্ন সমস্যা দূর করে।
৬. নারকেল তেল
যা প্রয়োজন হবে
• ভার্জিন নারকেল তেল।
নারকেল তেল খাওয়া! জ্বী, আপনি ঠিকই শুনেছেন আমি নারকেল তেলের কথাই বলেছি। রোজকার খাদ্যভোজ্য তেলের জায়গায় বা নিজের খাদ্যতালিকায় আপনি নারকেল তেল যোগ করতে পারেন।
নারকেল তেলে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা গ্যাস্ট্রাইটিসের কারণে পাকস্থলীর আবরনের উপর জোর দেওয়া অক্সিজোটিক চাপকে হ্রাস করতে সহায়তা করে। এছাড়াও নারকেল তেলে রয়েছে ‘এমসিটি’ নামক এক প্রকার ফ্যাটি অ্যাসিড যা মানুষের হজমকার্যে সাহায্য করে।
৭. গ্যাস্ট্রাইটিসের জন্য গ্রিন টি

যা যা প্রয়োজন হবে
• ১ চা চামচ গ্রিন টি।
• ১ চা চামচ মধু।
• এক কাপ গরম জল।
যেভাবে তৈরি করবেন
গ্রিন টি তৈরি করে এতে মধু যোগ করুন এবং ভালভাবে মেশান।
দিনে দুই কাপ গ্রিন টি পান করুন।
উপকারিতা
উচ্চমাত্রার ক্যাফেইন এবং প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ গ্রিন টি পাকস্থলীর আবরণের প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব দেয় এবং গ্যাস্ট্রাইটিসের লক্ষণগুলি হ্রাস করে। নিয়মিত গ্রিন টি পান বমির ভাব দূর করে, পাকস্থলীর কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
৮. গ্যাস্ট্রাইটিসের জন্য আদা

যা যা প্রয়োজন হবে
• এক ইঞ্চি লম্বা আদা।
• এক কাপ পানি।
গ্যাস্ট্রাইটিসের জন্য আদা একদম উপযুক্ত প্রতিষেধক। গ্যাস্ট্রাইটিসের জন্য আদা আপনি বিভিন্নভাবে খেতে পারেন।
• আদা রস করে খেতে পারেন।
• আদা কুচি করে কেটে লবন দিয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন।
• আদা পাউডার গরম পানিতে গুলে খেতে পারেন।
• আদা রস করে পানিতে মিশিয়ে সাথে অন্য কিছু যোগ(স্বাদ বৃদ্ধির জন্য) করে খেতে পারেন।
ভালো ফলাফলের জন্য প্রতিদিন সকালে খেতে পারেন।
উপকারিতা
সুপার ভেষজখ্যাত আদা গ্যাস্ট্রাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য আর্শীবাদস্বরূপ। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুন গ্যাস্ট্রাইটিসের সমস্যা দূর করে এবং বিশেষ করে হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি দ্বারা সৃষ্ট প্রদাহকে দমন করে।
৯. গ্যাস্ট্রাইটিসের জন্য দই বা টক দই

যা প্রয়োজন
• দই।
প্রতিদিনের খাবার তালিকায় হিসাবে দই রাখুন।
গ্যাস্ট্রাইটিসের জন্য প্রতিদিন ১-২ কাপ দই খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েই থাকে। অনেকে দই এর বদলে টক দই ও খেয়ে থাকেন।
উপকারিতা
টক দই / দই একটি দুর্দান্ত প্রোবায়োটিক। প্রোবায়োটিকগুলি গ্যাস্ট্রিক আলসার নিরাময়ে সাহায্য করে এবং গ্যাস্ট্রাইটিসের অন্যতম প্রধান কারণ হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরির নির্মূলকরণে সহায়তা করে।
১০. গ্যাস্ট্রাইটিসের জন্য মধু

যা প্রয়োজন
• ২ টেবিল চামচ মধু।
• এক গ্লাস কুসুম গরম পানি।
এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে মধু যোগ করুন এবং ভালভাবে মিশ্রণটি নাড়ুন।
রোজ সকালে খালি পেটে এটি পান করুন।
উপকারিতা
মধুর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুন পাকস্থলীর ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলতে পারে এবং এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য পাকস্থলীর প্রদাহ কমিয়ে শান্ত করতে সহায়তা করে। এছাড়াও মধু হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে।
১১. গ্যাস্ট্রাইটিসের জন্য জিরা পানি

যা প্রয়োজন
• ১ টেবিল চামচ জিরা (জিরা)।
• এক গ্লাস গরম পানি।
যেভাবে তৈরি করবেন
জিরা হালকা ভেজে নিন। এরপর পিষে গুঁড়ো করে নিন। গরম পানির সাথে মিশিয়ে পান করুন।
দিনে ১/২ বার খাবারের সাথে বা নিজের সুবিধামতো সময়ে খেতে পারেন।
উপকারিতা
জিরা’তে বিদ্যমান অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য গ্যাস্ট্রাইটিসের লক্ষণগুলি হ্রাস করতে সহায়তা করে এবং তাৎক্ষণিক ব্যাথা থেকে মুক্তি দেয়।
১২. গ্যাস্ট্রাইটিসের জন্য ওটমিল
যা প্রয়োজন
• ১/২ কাপ ওটমিল।
• ১/ ২-১কাপ জল বা দুধ।
যেভাবে তৈরি করবেন
জল বা দুধের সাথে ওটমিল রান্না করুন (আপনার পছন্দ অনুযায়ী) এবং এটি খান। আপনি কিছু টাটকা অ-অম্লীয় ফল যেমন কলা, নাশপাতি এবং আপেল ইত্যাদি যোগ করতে পারেন।
প্রতিদিন এক কাপ ওটমিল খেতে পারেন।
উপকারিতা
ওটমিলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং খনিজ উপাদানগুলি থাকে যা হজম প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
১৩. গ্যাস্ট্রাইটিসের জন্য আনারস

যা প্রয়োজন
• ১ কাপ পাকা আনারস।
হজম প্রক্রিয়াটি সহজতর করতে প্রতিদিন আনারস খেতে পারেন অথবা আনারস রস করে খেতে পারেন।
উপকারিতা
আনারসে ব্রোমেলেন এনজাইম রয়েছে যা পাকস্থলীতে প্রোটিন হজমে সহায়তা করে। যদি আপনি গ্যাস্ট্রাইটিসে আক্রান্ত হন তবে আনারস খেতে পারেন কারণ এটি ক্ষারীয় প্রকৃতির এবং আপনার পেটে অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
সতর্কতা
আনারস খাওয়ার সময় লক্ষ্য রাখুন যে আনারসটি যেন খুব পাকা আনারস হয় কারণ কাচা বা অর্ধপাকা আনারসে গ্যাস্ট্রাইটিসের সমস্যা কমার বদলে বাড়তে পারে।
১৪. গ্যাস্ট্রাইটিসের জন্য হলুদ

যা প্রয়োজন
• ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো।
• পানি।
• দই বা কলা।
যেভাবে তৈরি করবেন
হলুদ গুঁড়োতে কিছুটা পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এটি দই বা কলার সাথে বেন্ড করে খেতে পারেন।
উপকারিতা
হলুদে রয়েছে কারকিউমিন, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান যা পাকস্থলীর যে
কোনো সংক্রমণকে প্রতিহত করে এবং পাকস্থলীর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
১৫. যষ্টিমধু

যা প্রয়োজন
• ১ চা চামচ যষ্টিমধু।
• এক গ্লাস গরম পানি।
এক গ্লাস গরম পানিতে ১ চা চামচ যষ্টিমধু নিয়ে ভালোভাবে নাড়ুন।
প্রতিদিন একবার খেতে পারেন।
উপকারিতা
যষ্টিমধু পাকস্থলীর রক্ষক হিসেবে কাজ করে এবং আলসার বা ক্ষত নিরাময়ে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
১৬. গ্যাস্ট্রাইটিসের জন্য আলুর রস

যা প্রয়োজন
• ২-৩ টি কাঁচা আলু।
• গরম পানি।
যেভাবে তৈরি করবেন
আলুর খোসা ছাড়িয়ে টুকরো টুকরো করে নিন।
আলু ব্লেন্ড করে নিন। আধা গ্লাস কিছুটা হালকা গরম পানিতে আলুর রস মিশিয়ে খাওয়ার আধা ঘন্টা আগে পান করুন।
দৈনিক ১/২ বার খেতে পারেন।
উপকারিতা
আলুর রস অ্যাসিডটির মাত্রা কমায়।
সর্বোপরি নিয়মমাফিক জীবনযাপন করুন, স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিগুনসমৃদ্ধ খাওয়া দাওয়া করুন। সুস্থ থাকুন,ভালো থাকুন।