COVID-19 মহামারীতে দীর্ঘদিন ঘরে বন্দী থেকে আপনি হয়তো মানসিকভাবে অনেকটা বিষন্ন হয়ে যাচ্ছেন এবং খুবই বিরক্ত বোধ করছেন। আপনি সাধারণত এত সময় পান না কিন্তু এখন পেয়ে বুঝে উঠছেন না যে সময়টাকে কিভাবে সদ্ব্যবহার করবেন।
এই সময়টি ব্যবহার করতে আপনাকে বিখ্যাত কোন উপন্যাস লেখার প্রয়োজন হবে না; তবে আপনি আপনার দিনের সময়টিকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য একটি কাঠামো, তৈরি করতে পারেন। তো আসুন, এ সময়ে ঘরে বসে আপনি কি কি কাজ করতে পারেন তার উপর কিছু ধারনা নেওয়া যাক।
ছুবি আঁকুন, রং করুন :

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে যে একটি যুক্তিসঙ্গত জটিল জ্যামিতিক প্যাটার্নের কাঠামোযুক্ত রঙিন ছবি বা রঙিন বই উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। এটা আপনাকে ধ্যানমগ্ন হতে সাহায্য করে। ছবিগুলোকে নিজের প্যাটার্ন আঁকারে রঙ করার মাধ্যমেও আপনি কিছুটা আত্ম সম্মোহনের (Self-Hypnotized) চেষ্টা করুন।
ঘর বাড়িতেই হাঁটাহাঁটি করুন :
হাঁটা কেবলই শারীরিক ক্রিয়াকলাপ হিসাবে গণ্য হয় না, তবে মানসিক সুস্বাস্থ্য ও দান করে। হাঁটার জন্য নিয়মিত বাইরে গেলে আপনার সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পাবে। ২০১৬ এর একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে হাঁটাচলা আপনাকে আরও সুখী করে তুলতে পারে এবং বিরক্তি ও আতঙ্কজনক অনুভূতি কমাতে পারে, এমনকি আপনি কেবল বাইরে নয় বাড়ির ভিতরেও হাটতে পারেন। (COVID-19 মহামারী, চলাকালীন বাইরে হাঁটতে এবং অন্য ব্যক্তিদের থেকে কমপক্ষে ছয় ফুটের দূরততে থাকা নিরাপদ।)
নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুমিয়ে নিন :
সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমানো খুবি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আপনি যখন কম ঘুমাবেন তখন আপনার শরীরে সংক্রামক রোগগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। গবেষণায় দেখা গেছে যে মানুষ যদি পর্যাপ্তভাবে না ঘুমায় তবে মানুষ অন্যান্য ধরণের ভাইরাস (যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং রাইনোভাইরাস) দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।শুধু মনে রাখবেন যে খুব কম বা খুব বেশি ঘুমানো হতাশার লক্ষণ হতে পারে।
যোগ ব্যায়াম করুন :

যোগব্যায়াম করার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারেন। এটি কেবল শারীরিক ক্রিয়াকলাপ হিসাবে গণ্য হয় না, যোগব্যায়াম আপনার মেজাজ, নিম্ন চাপ এবং উদ্বেগকে (Stress) নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়তা করে এবং আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে। অনলাইনে যোগ ব্যায়ামের বেশ কয়েকটি ক্লাস রয়েছে যা নিজের ঘরে বাসেই স্বাচ্ছন্দ্যমত করতে পারেন।
বন্ধুর সাথে চ্যাট করুন
আপনার বন্ধুদের এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে কল, টেক্সট, ইমেল বা ভিডিও চ্যাট করুন। সামাজিকভাবে দূরত্বের অর্থ এই নয় যে আপনি তাদের সাথে সংযুক্ত থাকতে পারবেন না। শারিরীক দুরত্ব রাখুন, আত্মিক নয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে সামাজিক সম্পর্ক বা যোগাযোগ আপনাকে মানসিক চাপ থেকে দূরে রাখে।
কিছু সময়ের জন্য গান শুনুন :
আপনি হয়তোবা দেখেছেন কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন গান গেয়ে ভিডিও বানিয়েছে যা অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে সংগীত অনেক বড় ভুমিকা রাখে। সংগীত মানুষকে ভীতি এবং মানষিক চাপ থেকে রক্ষা করে, ক্যান্সার রোগীদের উপর একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সংগীত উদ্বেগ এবং ব্যথা হ্রাস করতে সহায়তা করে।
নামায পড়ুন তথা আপনার সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করুন:
আপনি নিয়মিত নামায আদায় করুন। নামায পড়বেন একগ্রচিত্তে। গভীর রাতে নফল নামায তথা তাহাজ্জতের নামায পড়লে আপনি খুবই ভাল বোধ করবেন। একাগ্রচিত্তে নামায যেন আল্লাহর সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ করা।
সর্বোপরি, ভাল থাকবেন, ভার কাজ করবেন, মিথ্যা এড়িয়ে চলুন আপনি ভাল বোধ করবেন।